বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার জারি

নবসূচিত ‍‍ ‘স্মার্ট‍‍’ সুদহার জুলাই ১ থেকে কার্যকর করতে সব ব্যাংক-কে নির্দেশ

এম মনিরুল আলম

জুন ১৯, ২০২৩, ১১:২৬ পিএম

নবসূচিত ‍‍ ‘স্মার্ট‍‍’ সুদহার জুলাই ১ থেকে কার্যকর করতে সব ব্যাংক-কে নির্দেশ

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

নতুন মুদ্রানীতি অনুসরণ করে করিডোর বা স্মার্ট পদ্ধতি অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে ঋণ ও বিনিয়োগের সুদহার নির্ধারণ করতে নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার (১৯ জুন) এক সার্কুলারে দেশে কার্যরত সবগুলো তফসিলি ব্যাংককে পহেলা জুলাই থেকে এ নতুন নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে।

সার্কুলারে যা আছে
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের বাজার সুদকে ভিত্তি ধরে একটি রেফারেন্স রেট
নির্ণয় করা হবে যা SMART (Six-Month Moving Average Rate of Treasury Bill) নামে অভিহিত হবে। ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক নির্ণীত এ SMART Index প্রতিমাসের প্রথম কর্মদিবসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে SMART এর সাথে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে।

কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। সিএমএসএমই ঋণ এবং ভোক্তা ঋণের (Consumer Financing) আওতাধীন পারসোনাল ঋণ ও গাড়ি ক্রয় ঋণের ক্ষেত্রে উল্লিখিত সুদহারের অতিরিক্ত সর্বোচ্চ ১ শতাংশ সুপারভিশন চার্জ আদায় করা যাবে।

সুপারভিশন চার্জ বছরে একবার আদায়/আরোপ করা যাবে। বার্ষিক ভিত্তিতে আরোপিত এ সুপারভিশন চার্জের উপর চক্রবৃদ্ধি হারে কোনো চার্জ বা সুদ আরোপ করা যাবে না। তবে কোনো ঋণ হিসাব বছরের মধ্যবর্তী সময়ে সমন্বিত করার ক্ষেত্রে ১ শতাংশ হারে আনুপাতিক সময়ের জন্য সুপারভিশন চার্জ আদায় করা যাবে।

যে মাসের সুদহার নির্ধারণ করা হবে তার অব্যবহিত পূর্ববর্তী মাসের SMARTকে ভিত্তি ধরে সুদহার নির্ধারণ
করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, মার্চ মাসের সুদহার নির্ধারণে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য নির্ধারিত SMARTকে
বিবেচনায় নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার কর্তৃক গঠিত প্রণোদনা প্যাকেজ/বিশেষ তহবিলের আওতায় প্রদত্ত ঋণের সুদহার নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট তহবিলের জন্য প্রণীত নীতিমালা প্রযোজ্য হবে।

এতদ্ব্যতীত ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত বিদ্যমান সার্কুলার/সার্কুলার লেটারে বর্ণিত নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

নতুন সূচিত পদ্ধতিতে সুদহার পরিবর্তনের ফলে গ্রাহকের ঋণের প্রদেয় কিস্তির পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে কিস্তি পুনর্নির্ধারণের পূর্বে আবশ্যিকভাবে গ্রাহককে অবহিত করতে হবে।

ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংকসমূহ ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক ঘোষিত SMARTকে ভিত্তি ধরে তার সাথে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ ও কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ মার্জিন যোগ করে বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফার হার নির্ধারণ করবে।

বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৪ তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১২ এর নির্দেশনা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট মাসের ৭ তারিখের মধ্যে উক্ত মাসের ঘোষিত সুদহার বিবরণী ওয়েব পোর্টাল এর মাধ্যমে Enterprise Data Warehouse (EWD)-এ আপলোড চলমান থাকবে।

নতুন ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মাসের জন্য নির্ধারিত সুদহার কার্যকর হবে। সুদহার স্থির (Fixed) অথবা
পরিবর্তনশীল (Variable) যে প্রকৃতিরই হোক না কেন তা ঋণ প্রদানের পূর্বে ঋণগ্রহীতার সম্মতিক্রমে নির্ধারিত হতে হবে। তবে পরিবর্তনশীল প্রকৃতির সুদহার প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রতি ৬ মাস পর পর পরিবর্তন কার্যকর হবে।

উদাহরণস্বরূপ ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে নতুন ঋণ প্রদান করা হলে পরিবর্তনশীল সুদহার ০১ জুলাই ২০২৪ তারিখে পরিবর্তনযোগ্য হবে।

নতুন এ নির্দেশনা জারির প্রেক্ষিতে বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৩ তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ও কৃষি/পল্লী ঋণের সুদহার সংক্রান্ত বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৮ তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২১ এর সকল নির্দেশনা রহিত করা হলো।
সার্কুলারে বলা হয় ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর ২৯ (২)(চ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো এবং এ নির্দেশনা ১ জুলাই ২০২৩ তারিখ হতে কার্যকর হবে।

Link copied!